প্রত্যয় হিরনের ইউটিউবার হওয়ার গল্প।
প্রত্যয় আর তার বন্ধু ফাইয়াজ আবরার একদিন হিরনের মোবাইল ফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরা চেক করার জন্য কয়েকটা ভিডিও করে। ভিডিওগুলো বেশ মজার হয়। মাথায় চিন্তা আসে মানুষ দেখলে হয়তো বেশ মজা পাবে। তারপর ভিডিওগুলো একসঙ্গে অ্যাড করে ইউটিউবে ছাড়ে। প্রথম রাতে প্রায় ৯০ ভিউ হয়। এই ৯০ ভিউ তাদের কাছে সে সময় সংখ্যায় অনেক ছিল। অনুপ্রেরণা সেই ৯০টি ভিউ। তারপর থেকে শুরু হয় কাহ করা।
![প্রত্যয় হিরন](https://www.manobkantha.com/wp-content/uploads/2017/12/Prottoy-Heron-3.jpg)
ইউটিউবার প্রত্যয় হিরন বলেন, খুব দ্রুত আমাদের সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে। কাজ করছি ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে। ২ বছরের বেশি সময়। কিন্তু মানুষ চেনা শুরু করেছে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে। অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে এই দিনগুলোর জন্য। তবে সত্য হলেও এটি স্বীকার করব এখন পর্যন্ত ইউটিউব থেকে ১টাকাও আয় করতে পারিনি।
তবে স্পন্সর থেকে অনেক টাকায় পেয়েছি।
তবে স্পন্সর থেকে অনেক টাকায় পেয়েছি।
প্রত্যয় হিরন নারায়ণগঞ্জের ছেলে। ক্লাস ওয়ান থেকে টেন, এখন পর্যন্ত ৫টি স্কুল বদল করেছে। পড়ালেখায় খুব ভালও না, আবার একেবারে খারাপ না। কিন্তু আগ্রহ আছে এবং উচ্চশিক্ষা শিক্ষিত হয়ে দেশও দশের পাশে দাঁড়ানো ইচ্ছাও আছে। ক্লাস টু থেকেই বাসায় একা থাকত প্রত্যয়। বাবা-মা দুইজনই চাকরি করেন। ভাই বোন নেই। তিনজনের পরিবারে বাবা-মা চাকরিতে গেলে একই থাকতে হতো বাড়িতে। ইউটিউবার প্রত্যয় হিরনের বয়স এখন ১৬। ২০০১ সালের ৪ জুন জন্ম। বাবা আলমগীর হিরন আর মা সালিনা আক্তার। নারায়নগঞ্জ কলেজে একাদশ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রত্যয়। নারায়নগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি দিয়েছি।
ইউটিউবার প্রত্যয় হিরন বলেন, বর্তমানে শর্টফিল্মের দিকে বেশি ফোকাস দিচ্ছি। নিজেদের আরো ক্রিয়েটিভ করে তোলার জন্য। পড়ালেখারও চাপ তো আছেই তাই কঠিন হচ্ছে সময় বের করে ইউটিউবে কাজ করা। মিউজিক কম্পোজিং শেখার অনেক শখ। ওখানেও ফোকাস দিচ্ছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত নিজেদের চ্যানেল ছাড়া অন্য কোথায়ও কাজ করা হয়নি। কিন্তু শিগগিরই অন্যদের সঙ্গে কাজ করা হবে। এছাড়া আমার কাছে আমার চ্যানেলের প্রতিটি কাজই অনেক বড় কাজ।
![প্রত্যয় হিরন](https://www.manobkantha.com/wp-content/uploads/2017/12/Prottoy-Heron-2.jpg)
পুরস্কার প্রাপ্তি আর অর্জন সম্পর্কে ইউটিউবার প্রত্যয় হিরন বলেন, অবাক হলেও সত্যি যে আমি আজ পর্যন্ত কোনো কিছুর জন্য কোনো পুরস্কার পাইনি। একবার পেয়েছিলাম একটি মগ। স্কুলের পিকনিকের দৌঁড় প্রতিযোগিতায়। নিজের পাওয়া কোনো ট্রফি নাই আমার। কিন্তু যখন ৩০০ বা ৪০০ সাবস্ক্রাইবার ছিল তখন মাকে বলেছিলাম, আমি কোনোদিনও তোমাদের জন্য কোনো ট্রফি আনতে পারিনি কিন্তু দেখো আমি একদিন তোমাদের জন্য সিলভার প্লে বাটন নিয়ে আসবো। ইউটিউব থেকে আসা পুরস্কারই হবে আমার জীবনের প্রথম পুরস্কার। সত্যিই সিলভার প্লে বাটন থেকেই শুরু হয়েছে পুরস্কার। আর লাখ লাখ মানুষের ভালবাসা কোনো পুরস্কারের থেকে কম নয়। আমি সব সময়ই অবাক হই, আমি মাত্র ১৬ বছরের একটি ছেলে; এত কেন আমাকে মানুষ ভালবাসে?
প্রত্যয় হিরন আরো বলেন, আমার যতটুকু অর্জন বাবা-মা, রায়হান, রিচি, নিলয়, ফাত্তাহ, মগনে-এদের জন্য। আমি ভাগ্যবান এর জন্য ২.৫ লাখ সাবস্ক্রাইবার আছে আমার সাথে। আমি ভাগ্যবান কারণ আমার এতটা সার্পোট বাবা মা দিয়েছে এবং এটি সাপোর্টিং টিম পেয়েছি বলে। ইউটিউবিং অনেক সহজ একটি কাজ আবার অনেক কঠিনও। যদি ভিতরে ভাল কিছু করে দেখানো প্রতিভা থাকে তাহলে অবশ্যই এক সময়, না এক সময় মন মত ফল পাওয়া যাবে। হয়তো আশার থেকেও বেশিও পাওয়া যায়। কিন্তু যদি সন্তুষ্টু না হয়ে কাজ করা থামিয়ে দেয় কেউ তাহলে সে কাজ না করাই ভালো। এছাড়া আগামী ১০ বছরের মধ্যে চাই আমার গ্রুপে যারা আছে তারা সবাই যেন নিজের মন মত প্রফেশনে যেতে পারে। আমার বাবা মা যেন আমাকে নিয়ে খুশি থাকে। নিজেকে একজন ১ মিলিয়নের বেশি সাবস্ক্রাইবার চ্যানেলের মেম্বার হিসেবে দেখতে চাই। আর একটা কথা বলবো, ‘আজাইরা লিমিটেড’ আমার গ্রুপের সবার চ্যানেল। এই চ্যানেল কারো একার নয়।
Comments
Post a Comment